হিফজুর রহমান তালুকদার জিয়া::
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বিয়ের কাবিন জালিয়াতি নিয়ে সুনামগঞ্জ আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। গত ২০ ফেরুয়ারী শাহনাজ পারভীন লিসা বাদী হয়ে তার স্বামী চুনু মিয়া, দেবর জালিয়াতকারী মোঃ সোলেমান আহমদসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে আমল গ্রহনকারী জুডিসিয়াল ম্যাডিজস্ট্রেট আদালত জগন্নাথপুর সুনামগঞ্জে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিলেট পিবিআই এর নিকট হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে কাজি অফিসের সহায়ক মোঃ সোলেমান আহমদ বলেন, আমার ভাবী শাহনাজ পারভীন লিসার রেজিষ্ট্রারকৃত কাবিননামার মূল ভলিয়মে ঘষামাজা করে শাহনাজ পারভীন লিসা নাম পরিবর্তন করে সাজেদা বেগমের নাম বসিয়ে আপন বড় ভাইকে লন্ডনে পাঠিয়েছি।
মামলার সূত্রে জানা যায়, জগন্নাথপুর পৌর শহরের বাড়ী জগন্নাথপুর গ্রামের সাজিদ আলীর ছেলে চুনু মিয়ার সাথে কেশবপুর গ্রামের মৃত আরিফ উল্ল্যার মেয়ে শাহনাজ পারভীন লিসার বিয়ে হয়। স্বামী চুনু শাহনাজ পারভীন লিসাকে রেখে কাবিনামার মূল ভলিয়মে তার ভাই সোলেমানের মাধ্যমে স্ত্রীর
নাম পরিবর্তন করে সাজেদা বেগমের সাথে কাবিনে দেখিয়ে স্পাউস ভিসায় লন্ডন চলে যায়।
সোলেমান আরো জানান, আমার ভাইয়ের সাথে কাবিনমূলে কেশবপুর গ্রামের আরিফ উল্ল্যার মেয়ে শাহনাজ পারভীন লিসার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আমার ভাবী শাহনাজ পারভীনকে স্টুডেন্ট ভিসায় ইউকে যাওয়ার জন্য আইএলটিএস এ ভর্তি করাই। আইএলটিএস পরীক্ষায় বার বার অংশ গ্রহণ করেও পাশ করতে না পারায় আমার ভাবী শাহনাজ পারভীন লিসার সম্মতিক্রমে আমার ভাই চুনু মিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার শর্তে আইএলটিএস পাশ করা সাজেদা বেগমের সাথে বিবাহের একটি কাবিননামা তৈরী করি। আমি কাজি মঈনুল ইসলাম পারভেজের একজন অফিস সহায়ক হিসেবে দীর্ঘ দিন থেকে কাজ করে আসছি৷ আমি অফিস সহায়ক হওয়ার সুবাদে আমার ভাইয়ের পুরাতন কাবিননামার মূল ভলিয়মে ঘষামাজা করে ভাবী শাহনাজ পারভিন লিসার নাম ঠিকানা মুচে এর স্থলে সাজেদা বেগমের নাম ঠিকানা বসিয়ে কাবিননামা প্রস্তুত করি। কাজী মুঈনুল ইসলাম পারভেজ হুজুরের অগোচরে আমি নিজ হাতে এই কাজটি করেছি। এর সাথে কাজী মঈনুল ইসলাম পারভেজ হুজুর কোন ভাবেই জড়িত নন। এবং এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না।
এ বিষয়ে কাজী মঈনুল ইসলাম পারভেজ জানান, আমার কাজী অফিসে সহযোগিতা করার জন্য মোঃ সোলেমান আহমদকে অস্থায়ীভাবে কাগজপত্র আদান-প্রদানের জন্য রেখেছিলাম। সে বিশ্বস্থতার সাথে দীর্ঘদিন থেকে আমার অফিসে আমাকে সহযোগিতা করে আসছিল। ঘটনার সময় আমি আমার পারিবারিক অসুবিধা ও আমার মা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার কারণে বেশ কিছুদিন প্রায় দিন অফিসে আসতে না পারায় সোলেমানকে অফিসের তালার সমস্ত চাবী প্রদান করি। এই সুযোগে সে তার ভাইকে লন্ডন পাঠাতে আমার আলমিরা থেকে বালাম বের করে সে নিজে এই কাজটি সম্পন্ন করে । সে যে এই জালিয়াতিটি করেছে তা আমার কাছে সুলেমান নিজেই স্বীকার করেছে। এর সাথে আমি কোন ভাবে জড়িত নয়। তাছাড়া পিবিআই তদন্ত অফিসার বাদী ও বিবাদী পক্ষের আত্মীয়স্বজনের উপস্থিতিতে আমার কাজী অফিসে এসে অফিস সহায়ক মোঃ সোলেমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সোলেমান সে নিজে এই জালিয়াতি কাজটি করেছে মর্মে স্বীকারেক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। সে কিভাবে এবং কেন জালিয়াতি করেছে এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ ও বিস্তারিত জবানবন্দীটি পিবিআই তদন্ত কর্মকর্তা ভিডিও রেকর্ড করেন। সোলেমান প্রদত্ত জবানন্দীতে উক্ত কাবিন জালিয়াতিতে আমি কোনভাবেই জড়িত নই তা সে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে। তার পরেও একটি মহল আমার মানসম্মানহানী ও আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার হীন উদ্দেশ্য সঠিক তথ্য উপস্থাপন না করে আমার বিরুদ্ধে একের পর এক সংবাদ পরিবেশন করে চলেছে । আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
Leave a Reply