হিফজুর রহমান তালুকদার জিয়া::
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর, হাওর ও খাল-বিলের পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
ফলে বাড়িঘর, দোকানপাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যায় জগন্নাথপুর পৌরসভার বিভিন্ন গ্রাম বাড়িজগন্নাথপুর, হবিবপুর, কেশবপুর, ভবানীপুর শেরপুর, যাত্রা পাশা সহ গ্রামীণ পাকা রাস্তা ও বাড়িঘর বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়।
কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে রানীগঞ্জ বাজারের বেশিরভাগ দোকান পাটে বন্যার পানি প্রবেশ করে।
উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর, কলকলিয়া, রানীগঞ্জ, পাটলী, মিরপুর, সৈয়দপুর- শাহারপাড়া, আশারকান্দি ও পাইলগাঁও ইউনিয়নের হাজারো গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এসব ইউনিয়নের বসবাসরত পানি বন্দী মানুষ।
ইউনিয়ন থেকে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগের বিভিন্ন সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন উপজেলার হাজার হাজার মানুষ। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে জগন্নাথপুর আব্দুস সামাদ আজাদ অডিটোরিয়ামসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্র গুলো খোলা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে বন্যায় কবলিত অসহায় মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে বন্যাকে পুঁজি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কেরোসিন, ডিজেল, গ্যাস সিলিন্ডার ও মোমবাতিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, টানা বৃষ্টিপাত ও জমে থাকা পানির কারণে ঘর থেকে বের হওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যাতায়াত ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ায় সবচেয়ে বেশী অসহায় হয়ে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। ত্রাণ কার্যক্রমও খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। বেশিরভাগ ঘরবাড়ি পানিতে থাকায় অনেকের ঘরে চাল ডাল ও-সবজি থাকলেও সেগুলো রান্না করে খাওয়ার মতো ব্যবস্থা নেই।
তাদের কষ্ট অর্জিত শোনার ফসল গোলায় তুললেও বর্তমানে বন্যার পানিতে ভেসে যাচ্ছে, অনেকে আবার গরু ছাগল হাঁস মোরগ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। গরু ছাগল ও হাঁসের খাবারের সংকর দেখা দিয়েছে। এনিয়ে খামারিরা রয়েছেন অনেক দুশ্চিন্তায়। উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের শাসানী গ্রামের হাঁসের খামারের মালিক জামাল মিয়া জানান, আমার ১২০০টি হাঁস নিয়ে একটি খামার রয়েছে বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হাঁসের প্রাকৃতিক খাবারের সংকট দেখা দেয়, বর্তমানে হাঁস নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি।
জগন্নাথপুর গ্রামের তরুণ সমাজ সেবক, আফু মিয়া, আব্দুল জলিল ও নছির আলী জানান, কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে বন্যার পানি বেড়ে বাড়িঘরে মানুষ পানিবন্দি। ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছনা।
চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন কৃষক জানান, আমরা বোর ধান নির্বিঘ্নে ঘরে তোলেও বন্যার কারনে সে ধান হারাতে বসছি। বর্তমানে গবাদি পশু, ধান, আসবাপত্র ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চরম বিপাকে আছি। উপজেলা প্রশাসন সহ দানশীল ব্যক্তিদের আমাদের পাশে থাকার জন্য অনুরোধ করছি।
Leave a Reply