স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের জগদল ইউনিয়নের রায়বাঙ্গালী গ্রামে মাদ্রাসা ফান্ডের টাকা ও পারিবারিক পূর্ব বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের বন্দুকযুদ্ধে নারী পুরুষসহ উভয় পক্ষের প্রায় শতাধিক আহত হয়েছেন। ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার দুপুর ১২ টার দিকে রায়বাঙ্গালী গ্রামের মনু মিয়া সাবেক ইউপি সদস্য ও একই গ্রামের আব্দুল মালিক এর লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।এবন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় অনেকেই গুরুতর আহত হন।
খবর পেয়ে দিরাই থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
জানা যায়, আব্দুল মালিক রায়বাঙ্গালী শাহজালাল দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদ্য সাবেক সভাপতি। একই গ্রামের মনু মিয়া সাবেক মেম্বার ও তার দল এবং আব্দুল মালিক এর গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত পারিবারিক বিরোধ ও মামলা মোকদ্দমা চলে আসাবস্থায় মনু মিয়া সাবেক মেম্বার ও তার দল মাদ্রাসা ফান্ডের টাকা মাদ্রাসার একাউন্টে জমা রাখা নিয়ে বিগত ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার এ নিয়ে মাদ্রাসায় সালিশ অনুষ্ঠিত হয়। টাকা জমা রাখা নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সালিশগনের সম্মুখে কথা কাটাকাটি ও উত্তেজনা দেখা দিলে সালিশ পন্ড হলে দুই গ্রুপের লোকজন সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। মনু মিয়ার বাড়ি মাদ্রাসা সংলগ্ন হওয়ায় দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে আব্দুল মালিক এর লোকজনকে মারপিট শুরু করলে আব্দুল মালিক এর পক্ষের অন্তত চল্লিশ জন আহত হন। পরবর্তীতে উভয় পক্ষের লোকজন অবৈধ বন্ধুক দিয়ে গুলি ছুড়া শুরু করলে দুই গ্রুপের লোকজন গুলিবিদ্ধ হন।
বিগত ২০২০ সালের জুলাই মাসে মনু মিয়ার নিজস্ব অবৈধ একনলা বন্দুকসহ তাহার বাহিনীর সদস্য জমিল ও জিয়াউর কে গ্রেফতার করে ৬ জনকে আসামি করে দিরাই থানা পুলিশ মামলা দায়ের করেন।
আব্দুল মালিক এর পক্ষের আহতরা হলেন, ছাব্বির (১৬) মুতাহিন (৪০), শাহাদাত (২৪), আলী আমজাদ (৪০), সাইদুজ্জামান (২৫), জসিম (২৬), টিপু মিয়া (৩৮), হাবিবুর মিয়া (৩৯) কবির মিয়া (৪০), জগলু (৩২), রুহুল আমিন (৩৮),মজম উল্লা (৬০), মুমিন মিয়া (২৩) কে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক জগলু মিয়া, রুহুল আমিন,মজম উল্লা, মুমিন মিয়ার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন।
রায়বাঙ্গালী শাহজালাল দাখিল মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সদ্য সাবেক সভাপতি আব্দুল মালিক বলেন, মনু মিয়া ও তার লোকজন আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সামাজিক মিডিয়ায় সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমার নামে যে সংবাদ প্রকাশ করছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট। মাদ্রাসায় তাদের আদিপত্য বিস্তার করতে মনু মিয়া সাবেক মেম্বার ও তার লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও বন্ধুক দিয়ে গুলি চালিয়ে আমাদর ১৩ জনকে গুরুতর আহত করে এছাড়াও মাদ্রাসা ফান্ডের টাকা দিয়ে মাদ্রাসার কাজসহ গ্রামের মানুষের জন্য সকলের সমন্বয়ে কালর্ভাট নির্মান ও বিভিন্ন রাস্তা সংস্কার করা হয়ে থাকে।
জগদল ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ মোশাহীদ মিয়া বলেন, আমরা গ্রামবাসী মাদ্রাসা ফান্ডের টাকা দিয়ে গ্রামের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে থাকি। এবছরও খাটিয়ার খালে একটি কালভার্ট, বাউল তছর মিয়ার বাড়ির পার্শ্বে একটি ব্রীজ ও বাজার মসজিদে মাটি ভরাটসহ বাজারে যাওয়ার রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কাজ করছে। গ্রামের পরিস্থিতি শান্ত আছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply