সুলতানা রাজিয়া, স্টাফ রিপোর্টার:
গণবিপ্লবোত্তর জাতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনায় জনগণের অংশগ্রহণ বিষয়ে আমজনতার ভাবনা শীর্ষক সেমিনার ১৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাব আব্দুস সালাম মিলনায়তনে সকাল ১০.৩০ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার মাননীয়
বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুর রউফ, জাতীয় পর্যবেক্ষক পরিষদ এর সভাপতি মিসেস রেহানা সালাম এর সভাপতিত্বে ও সংগঠন এর সাধারণ সম্পাদক, বরেণ্য রাজনীতিবিধ ও নজরুল গবেষক মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ পাঠ করেন বিশিষ্ট নিরাপত্তা বিশ্লেষক, শিক্ষাবিদ ও নজরুল গবেষক কর্ণেল অবঃ কবি আশরাফ আল দীন সংগঠন এর প্রধান উপদেষ্টা ও পৃষ্ঠপোষক এম তোফাজ্জল হোসেনের লেখা স্বাগত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সহ সদস্য সচিব, কবি ও কথাসাহিত্যিক নাসরিন ইসলাম শেলী। সম্মানিত প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব ডক্টর মোহাম্মদ জকরিয়া, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট ও সিইও বাংলাভিশন ডক্টর আব্দুল হাই সিদ্দিক, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ এর সমন্বয়ক ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম উৎসব উদযাপন কমিটির আহবায়ক, রাস্ট্র চিন্তক মোঃ আসাদুজ্জামান
লেখক, গবেষক ও We want change এর প্রবর্তক জননেতা শামসুল আলম চৌধুরী সুরমা ভাই, জাতিয় নাগরিক ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ মুফতি সাইয়্যদ মাহদি হাসান বুলবুল, বাংলাদেশ গণ আজাদী লীগের মহাসচিব আলহাজ্ব মোঃ আকবর হোসেন, বরেণ্য নজরুল গবেষক ও রাস্ট্র চিন্তক প্রফেসর ডক্টর শহীদ মনজু, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধস মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিস, জাস্টিস পার্টির চেয়ারম্যান, এ্যাডভোকেট আবুল কাসেম মজুমদার, জনতার কথা বলে এর চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নাঈম হাসান কবি ও কথাসাহিত্যিক নাসরিন ইসলাম শেলী। এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম সোহাগ৷ কবি সুলতানা রাজিয়া,মূল প্রবন্ধে কর্ণেল অবঃ কবি আশরাফ আল দীন বলেন বিশ্বের যে কোন দেশের নিজস্ব প্রতিরক্ষার জন্য এক বা একাধিক বাহিনী থাকে এবং সেই বাহিনীগুলোর আকার, আকৃতি এবং প্রকার ওই দেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের উপর নির্ভর করে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এমন দ্বীপরাষ্ট্রও আছে যার প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠিত হয়েছে শুধুমাত্র “ইমিগ্রেশন পুলিশ” দ্বারা।
শত্রুতা না করলে শত্রু আক্রমণ করবে না এমন নয়! তাই, সঠিক প্রস্তুতি থাকতে হবে। ‘নন-ফাইটিং স্ট্রোটেজি’-র একটি বড় উপাদান হচ্ছে ‘ব্যাটেল প্রিপারেশন’।
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক্ষা বাহিনীর গৌরব জনক ইতিহাস আছে। সাম্প্রতিককালের রাজনীতিকীকরনের বিষ এবং স্বৈরশাসকের ইচ্ছায় এর অপব্যবহার কলঙ্কজনক, এবং একে দাঁড় করিয়েছে জনগণের মুখোমুখি। তাই নতুন বাংলাদেশের জাতীয় প্রতিরক্ষায় জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ কীভাবে সাধ্যের মধ্যে থেকে নিশ্চিত করা যায় সেটাই ভাবনার বিষয়। মানতেই হবে, এই ভাবনার প্রেক্ষিত অনেক প্রাণের বিনিময়ে আগস্ট ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে অর্জিত নতুন স্বাধীনতা।
তিনি আরো বলেন,
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনাঃ বাংলাদেশের জাতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সুবিন্যস্থ করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৮০ সালে বাহিনীর সমূহের যৌথ মহড়া “অপারেশন আয়রন শিল্ড”-এর মাধ্যমে। এই মহড়ার ফল হিসেবে দেশের প্রতিরক্ষায় জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে আনসার ও ভিডিপি (ভিলেজ ডিফেন্স পার্টি)-কে পৃথক একটি বাহিনী হিসেবে্ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে জাতীয় প্রতিরক্ষার যে ধারণা প্রস্তুত এবং প্র্যাকটিস করা হয়েছিল তা হলোঃ
১. দেশের প্রতিরক্ষার প্রাথমিক দায়িত্ব থাকবে সেনা নৌ ও বিমান বাহিনীর উপর।
২. সীমান্ত রক্ষী বাহিনী এবং কোস্টগার্ড শান্তি-কালীন সময়ে সীমান্তের দায়িত্বে থাকলেও যুদ্ধকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর সাথে যৌথভাবে কাজ করবে।
৩. বাংলাদেশ পুলিশ (আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নসহ) শান্তিকালীন সময়ে দেশের আভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করবে ও যুদ্ধকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর সাথে সমন্বয় রক্ষা করে দেশের প্রতিরক্ষার কাজে অংশগ্রহণ করবে।
৪. আনসার ভিডিপি একাডেমির মাধ্যমে দেশের বিপুলসংখ্যক জনগণকে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দেয়া হবে যাদের যুদ্ধকালীন সময়ে ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
৫. কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে গঠিত বিএনসিসি (বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর) যুদ্ধকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর সাথে সমন্বিত হয়ে দেশ রক্ষায় শামিল হবে।
এক্ষনে জাতীয় প্রতিরক্ষার ব্যবস্থার কি হবে? এক. জনগণের শক্তি।
১. কম্পালসারি মিলিটারি ট্রেনিং
২. সার্ভিস এবং মোটিভেশন
আলোচকগন বলেন সীমান্তে বর্ডার গার্ড নয় বাংলাদেশ রাইফেলস থাকবে। এরা হবে দেশপ্রেমিক এবং অরাজনৈতিক। প্যানেল আলোচক গণ বলেন প্রতিরক্ষা বাহিনীকে রাজনীতি-মুক্ত করা।
সংবিধান সংশোধন করে একক ক্ষমতা ও সীমাহীন ক্ষমতা কারো হাতে অর্পণ করা নয়; ক্ষমতার ‘চেক এন্ড ব্যালেন্স’ তৈরি করা।
বক্তাগণ আরো বলেন,
আত্মপরিচয়ে দৃপ্ত প্রতিরক্ষা বাহিনী ও জাতি গঠন অত্যাবশ্যক।
আমরা বাংলাদেশী এবং বাঙালি মুসলমানের দেশ হলো বাংলাদেশ। শতকরা ৯০% মুসলমানের এই দেশে আমাদের আছে আল্লাহর ভয়। আমাদের বিশ্বাসের বাতিঘর হচ্ছে আল কোরআন এবং কোরআন দেবে আমাদের চরিত্র ও জীবন গঠনের মৌলিক উপাদান। জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষ শুধু নয় বরং সকল প্রাণী এবং প্রকৃতির জন্য আমাদের জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতিটি সদস্য হবে আশ্রয় ও বন্ধু। আল্লাহর সন্তুষ্টি তাদের কাম্য। বক্তারা আরো বলেন
বিশাল প্রতিবেশী দেশ ভারত আমাদের চতুর্দিক থেকে ঘিরে আছে, কিছু অংশজুড়ে আছেন মায়ানমার। ধর্ম, গণ-মানসিকতা, ভূ-রাজনীতির লক্ষ্য ইত্যাদি প্রায় সকল বিষয়েই আমাদের মধ্যে মিলের চেয়ে অমিল অনেক বেশি। এসব বাস্তবতার নিরিখে প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে এবং বাকী বিশ্বের সাথে আমাদের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। প্রতিবেশী কখনো বন্ধু হয় না, তবে প্রতিবেশীর সাথে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করা যায় নিশ্চিতভাবেই।
Leave a Reply