আব্দুস সালাম (সিলেট) বিশ্বনাথ থেকে : সিলেটের বিশ্বনাথ থানার ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তির বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্ণীতির অভিযোগ এনে বাংলাদেশ পুলিশের মহা পরিদর্শক (আইজিপি) বরাবরে অভিযোগ দিয়েছেন মোহাব্বত শেখ নামের এক যুক্তরাজ্য প্রবাসী। তিনি উপজেলার দশপাইকা গ্রামের বাসিন্দা ও যুক্তরাজ্যর নরউইচ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। বৃহস্পতিবার (৫মার্চ) বিকেলে অবগতির জন্যে সিলেটের পুলিশ সুপার ও বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবরে ওই অভিযোগের অনুলিপিও দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার বিশ্বনাথের ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তির বিরুদ্ধে আইজপি বরাবরে অভিযোগ দেওয়া হয়।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী মোহাব্বত শেখ। তিনি জানান, তার চাচাতো ভাই শফিক আহমদ পিয়ারকে দিয়ে তিনি অভিযোগ দাখিল করেছেন। মোহাব্বত শেখের দাবি, ওসি তদন্ত রমা প্রসাদ চক্রবর্তি তার মামলার প্রধান আসামিকে বাঁচাতে মরিয়া। টাকার বিনিময়ে মামলায় অভিযুক্ত রফিকের ফেসবুক আইডির ইউআরএল নাম্বার পরিবর্তন করে অন্য ফেসবুক আইডি দিয়ে আাদলতে পরীক্ষার জন্য অনুমতি চেয়েছেন ওসি রমা প্রসাদ। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ফেসবুকে মানহানিকর ও কটুক্তিমুলক ষ্ট্যাটাস দেওয়ায় গত ১৩ অক্টোবর প্রবাসী মোহাব্বত শেখ ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইবুনালে সেচ্ছাসেবকলীগ নামধারী নেতা রফিক আলী ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫(১)ক/২৬(১)/২৯/৩১ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন, (পিটিশন মামলা নং ৩৪৪/১৯)। ২৪ অক্টোবর মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান বিশ্বনাথ থানার ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ৪মাসেও তিনি মামলার কোন স্বাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেননি। বরং মামলার আরজিতে অভিযুক্ত প্রধান আসামি মো: রফিক আলীর ফেসবুক আইডির লিংক না দিয়ে আসামি রফিক আলীর সাথে আতাঁত করে বড় অংকের টাকার বিনিময়ে মনগড়া অন্য একটি লিংক পরীক্ষা নিরিক্ষার জন্য সিআইডি’র সাইবার ক্রাইম এন্ড ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবের বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরীক্ষাপূর্বক মতামত প্রদানের জন্য বিজ্ঞ আদালতে আবেদন পাঠান। বিষয়টি মোহাববত শেখ তার আইনজীবীর মাধ্যমে জেনে ২০২০ সালের ১১ ফেব্রæয়ারি মামলার আরজিতে উল্লেখিত ইউআরএল’র ভিত্তিতে সঠিক প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য বিজ্ঞ আদালতে আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ ফেব্রæয়ারি বিজ্ঞ আদালতের বিচারক মোহামমদ আস্সামছ জগলুল হোসেন আরজিতে উল্লেখিত অভিযুক্ত মো: রফিক আলীর সঠিক ইউআরএল যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরীক্ষা নিরিক্ষা পূর্বক আগামি ১৬ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তিকে নির্দেশ প্রদান করেন, (স্মারক নং ২১২/২০)। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সিলেট জেলা প্রেসক্লাব ও সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবে সাবেক শিবির ক্যাডার ও বর্তমান নামধারী সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা অস্ত্রবাজ রফিক আলীর নিকট থেকে অস্ত্র উদ্ধারের নিমিত্তে তার বিরুদ্ধে সংবাদ-সম্মেলন করেছেন তারই গ্রামের নিরিহ লোকজন। এছাড়া মোহামব্বত শেখের আত্মীয় হাওয়ারুন নেছার দায়ের করা মামলার মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি রফিক আলীর বিরুদ্ধে অপহরণসহ আরও একাধিক মামলা রয়েছে। কিন্তু তারপরও চার্জশিটভুক্ত আসামি রফিক আলীকে ওই মামলা থেকে বাঁচাতে ওসি তদন্ত রমা প্রসাদ চক্রবর্তি মরিয়া। তিনি বিশ্বনাথ থানাসহ উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও চার্জশিটভুক্ত আসামি রফিক আলীকে নিয়ে যান এবং সখ্যতাও বেশি। অনুলিপি পাওয়ার সত্যতা জানালেও এ প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম মুসা। তবে, অভিযুক্ত ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবির্ত বলেছেন, ঘুষ-দুর্নীতির বিষয় নয়, মামলাটি একটি জটিল মামলা। আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে সিআইডির সাইবার ক্রাইম এন্ড ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবের বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরীক্ষার করার অনুমতি লাগে, যে কারণে প্রতিবেদন পাঠাতে বিলম্ব হচ্ছে। আর আসামির সঙ্গে সখ্যতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোন আসামি যদি আদালত থেকে জামিন নেয়, তাহলে সে সব জায়গায় বিচরণ করতে পারে।
Leave a Reply