হাসান আহমদ,ছাতক::
দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত স্কুল ছাত্র থইবা (১৩) বাঁচতে চায়। সে সিলেটের আম্বরখানা মনিপুরী মহল্লার দ্বিজেন্দ্র সিংহের পুত্র ও আম্বরখানা জালালাবাদ আবদুল গফুর ইসলামী আদর্শ হাইস্কুলের ৬ষ্ট শ্রেনির ছাত্র। দীর্ঘদিন ধরে স্কুল ছাত্র থইবা মায়োপেথি নামক দ‚রারোগ্যে আক্রান্ত হয়ে হাটা-চলা বন্ধ রয়েছে। শরিরের পিঠ ও পাঁ দুটি বাঁকা হয়ে আছে। সে বসতেও পারছে না। উন্নত চিকিৎসার অভাবে দিন দিন অবস হয়ে পড়ছে। এ ভাবে সময় পার হলে এ সুন্দর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করবে এমন আশঙ্কা করছেন থইবার পরিবার।
জানা যায়, জন্মের পর থেকে থইবা সুস্থ্য ছিল এবং হাটা-চলা করতে পারতো। ৩ বছর বয়স থেকে তার হাটতে পাঁয়ে সমস্যা দেখা দেয়। ৬ বছর বয়সে তাকে ভারতের গু-হাটিতে চিকিৎসার জন্য নেয়া হলেও সেখানের চিকিৎসক রোগ নির্ণয় করতে ব্যর্থ হয়। এক সময় তার পাঁ দুটি বাঁকা হয়ে যায়। এখন পিটের অংশও বাঁকা হয়ে আছে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে পাঁসহ সমস্থ শরির অবস হয়ে পড়ছে। ২০১৮ সালে রাজধানী ঢাকার নিউরোসাইন্স হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরিক্ষা-নিরিক্ষা করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন মায়োপেথি রোগে সে আক্রান্ত। চিকিৎসকরা বলেছিলেন বিশ্বে এ রোগের ঔষধ নেই। শুধু ফিজিও থেরাপী দেয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু একাধিকবার ফিজিও থেরাপী দেয়ার পরও সে সুস্থ হয়ে উঠছে না। ভারতের একটি এনজিও সংস্থার সাথে তারা আলাপ করে জানতে পেরেছেন, চেন্নাইতে এ রোগের উন্নত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে এবং ব্যয় হবে প্রায় ৩ লাখ টাক। এতো টাকা সংগ্রহ করা এ পরিবারের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
স্কুল ছাত্র থইবারের মা সুশিলা দেবী বলেন, অসুস্থতা নিয়ে থইবা ২০১৯ সালে প্রাইমারী সমাপনী পরিক্ষা দিয়ে পাশ করেছিল। চলতি বছরের জানুয়ারীতে তাকে ৬ষ্ট শ্রেনিতে ভর্তি দেন আম্বরখানা জালালাবাদ আবদুল গফুর ইসলামী আদর্শ হাইস্কুলে। তিনি আরও বলেন, তার স্বামী এক সময় কাপড়ের ব্যবসা করতেন। ৮ বছর আগে ব্রেইন স্ট্রোক করে এখনও শষ্যাসায়ী। পরিবারে আছে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। মেয়েটি সিলেট মহিলা কলেজে পড়ছে। অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসা ও সংসারে হাল ধরতে তিনি ৬ বছর আগে আম্বরখানা জালালাবাদ আবদুল গফুর ইসলামী আদর্শ কিন্ডার গার্টেনে শিক্ষক হিসেবে যোগ দান করেন। এখানে শিক্ষকতা করে যা পান তা দিয়ে সংসার চালান। অসুস্থ স্বামীরও মাঝে মধ্যে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। অসুস্থ্য স্বামী ও দ‚রারোগ্য আক্রান্ত একমাত্র ছেলেকে নিয়ে তিনি বিপাকে পড়েছেন। পরিবারের জমানো টাকাগুলোও ইতোমধ্যে তাদের চিকিৎসায় ব্যয় হয়ে গেছে। এখন তিনি শুন্য। তার এ কষ্ট যেন দিন দিন আরও ভারী হয়ে উঠছে। অর্থের অভাবে ছেলেটিকে চিকিৎসা দিতে পারছেন না। এদিকে করোনার কারণে চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে কিন্ডার গার্টেন বন্ধ থাকায় রোজগারের পথও ৭ মাস ধরে বন্ধ হয়ে আছে। আর কখন প্রতিষ্ঠান খোলা হবে অনিশ্চিত। স্বামী ও ছেলের চিকিৎসা করানোতো দ‚রের কথা রিতিমত তিন বেলা খাবারও জুটছেনা পরিবারের। সংসার চালাতে তাকে প্রত্যেহ হিমশিম খেতে হচ্ছে। আত্মীয়-স্বজন পাড়া প্রতিবেশিদের কাছ থেকে মাঝে মধ্যে আর্থিক সাহায্য নিয়ে চলছে সংসার। বিভিন্ন মানুষের দ্বারে ঘুরেও ছেলের চিকিৎসার টাকা যোগার করতে পারছেন না। তাই ছেলেটির জীবন বাঁচাতে তার চিকিৎসায় এগিয়ে আসতে সমাজের বিত্তবানসহ সর্বমহলের কাছে মানবিক সাহায্য কামনা করেছেন থইবারের পরিবার। থইবারের পিতা দ্বিজেন্দ্র সিংহ, সিলেট আম্বরখানা ডাচ বাংলা ব্যাংক হিসাব (নং-২০১১৫১০৫৪৮০৯) অথবা (০১৩০৩-৫৪১৮৫৭) নম্বর বিকাশে সাহায্য পাঠাতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
Leave a Reply