মো: হুমায়ুন কবির/ রিয়াজ রহমান/ হিফজুর রহমান তালুকদার জিয়া:-করোনা ভাইরাসের সংক্রমন রোধে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান কর্তৃক উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নে দেয়া বরাদ্দের মাস্ক ও সাবান বিতরণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এনিয়ে গত ৭ এপ্রিল কলকলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আলাল হোসেন রানা তার নিজ নামীয় ফেসবুকে দেয়া পোষ্টটি পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
যদিও এই সময়ে একথাগুলো লেখার ইচ্ছে আমার ছিলনা,তবুও বাধ্য হয়ে লিখতে হলো।আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এর মাধ্যমে জানতে পারলাম,মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী এম.এ মান্নান মহোদয়, নিজের ব্যক্তিগত উদ্যোগে উনার নির্বাচনী এলাকা জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার জনসাধারণের জন্য মাস্ক এবং সাবান বরাদ্দ করেন।
১ নং কলকলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বশির আহমেদ এর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে,তিনি বলেন, “সভাপতি ফখরুল হোসেন মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের বরাদ্দকৃত মাস্ক ও সাবান বিতরণ করেছেন;এব্যাপারে আমি অবগত নই।”
এব্যাপারে আমার ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজী সমছু মিয়া এবং সেক্রেটারি মিন্টু বাবুর কাছে জানতে চাইলে তারা জানান,” এব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না,তবে শুনেছি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক রাদেশ দেব নাথের কাছে মাস্ক ও সাবান আছে।”
পরবর্তীতে বিভিন্নভাবে জানতে পারলাম ফখরুল হোসেন ও রাদেশ দেবনাথ এই মাস্ক ও সাবান বিতরণ না করে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।
রাদেশ দেব নাথ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা ও কলকলিয়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি হারুনুর রশিদের কাছে মাস্ক বিক্রি করতে আসলে,তিনি রাদেশ দেবনাথকে প্রশ্ন করেন,”এত মাস্ক তুমি কোথায় পেলে?”
উত্তরে তিনি বলেন,”আমার একজন পরিচিত ডাক্তার এগুলো দিয়েছেন। “
তারপর হারুনুর রশীদ এতে সন্দেহবোধ করে এসব মাস্ক কিনেন নি।
উল্লেখ্য, ফখরুল হোসেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন।
তিনি বর্তমানে জাতির ক্রান্তিলগ্নে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সময়ে যেভাবে মাস্ক ও সাবান আত্মসাৎ করেছেন, ঠিক সেভাবে ২০১৭ সালেও অকাল বন্যায় যখন সুনামগঞ্জবাসীর ধান পানিতে তলিয়ে যায়,সেসময়ও তিনি সরকারি ওএমএস এর ডিলার হয়ে অভাবগ্রস্ত কলকলিয়াবাসীর জন্যে বরাদ্দকৃত সরকারি চাল চুরি করেন।যা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রচার হয়।
এটার বিচার না হওয়ার ফলে তিনি নিজ বাড়ির উঠোনে সরকারি রাস্তার লাইট লাগান,গোয়াল ঘরে সৌরবিদ্যুত লাগান,এমনকি সরকারি রাস্তার লাইট এখনো উনার বাড়ির উঠোনে বিদ্যমান আছে।
এভাবে বিচার বহির্ভুত থাকায় এবং জবাবদিহিতার অভাবে তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে বর্তমানে মন্ত্রী মহোদয়ের দেয়া মাস্ক ও সাবান আত্মসাৎ করতেও দ্বিধাবোধ করেননি।
রাদেশ দেবনাথ কালিটেকী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়নের টাকা মেরে খাওয়ায় তার বিরুদ্ধে দূর্নীতি দমন কমিশনের মামলা বিচারাধীন আছে।
এসব দূর্নীতিবাজরা নতুন করে দায়িত্ব পেয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।এভাবে চলতে থাকলে জনসাধারণের কাছে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।
তাই যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি,ওদেরকে এখনই থামান।
এনিয়ে গত ১৪ এপ্রিল কলকলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাদেশ দেবনাথ জগন্নাথপুর থানায় সাধারন ডায়েরী করেন। ডায়েরীতে উল্লেখ করেন করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে পরিকল্পনামন্ত্রী ৩৫০ পিছ মাস্ক ও ৩৫০পিছ সাবান কলকলিয়া ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ দেন। বরাদ্দকৃত মাস্ক ও সাবান বিতরনের জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক কলকলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: ফখরুল ইসলাম ও সাধারন সম্পাদক বশির আহমদকে দায়িত্ব দিলে আমি তাদেরকে উক্ত মাস্ক ও সাবান বিতরণে সহযোগিতা করি। ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের সমন্বয়ে মাস্ক ও সাবান বিতরণ করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার নিকট তালিকা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু গত ৭ এপ্রিল আলাল হোসেন রানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার নিজস্ব আইডি থেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে ফেসবুকে পোষ্ট করে। মো: মুহিনুল ইসলাম, হাজি মো: আব্দুল হাশিম, দিলু বক্্র নামক ফেসবুক আইডি থেকে আমাদের নামে একইভাবে মিথ্যা তথ্যের পাশাপাশি কু-রুচিপূর্ন মন্তব্য করে আমাদেরকে সামাজিক, রাজনৈতিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার পাশাপাশি আমাদের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। মাস্ক ও সাবান বিতরণ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার তদন্তক্রমে ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
Leave a Reply