হিফজুর রহমান তালুকদার জিয়া: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সদস্য মাহমুদ মিয়া ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রোকসানা বেগমের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নগদ সহায়তার তালিকায় স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ১নং ওয়ার্ডের কামরাখাই, জয়নগর, কুশারাই, হিলালপুর, মেঘারকান্দি, হরিনাকান্দি ও ইসলামপুর গ্রামের ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩হাজার ৬শ জন। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নগদ সহায়তার তালিকায় ১শ ৪৭জনের নাম দিলেও ইউপি সদস্য মাহমুদ মিয়া ও নারী সদস্যা রোকসানা বেগমের আত্মীয় স্বজনের নাম তালিকাভুক্ত করায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
এলাকবাসী জানান, ইউপি সদস্য মাহমুদ মিয়া ও নারী সদস্যা রোকসানা বেগম নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নিতী করে আসছে। তাছাড়াও অনেক গরীব অসহায় লোক নিরাপদ পানি ব্যবহারে নলকূপ না পেলেও নারী সদস্যা রোকসানা বেগম তার ক্ষমতা বলে নিজ বাড়িতে সরকারি নলকূপ স্থাপনের পাশাপাশি বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ায় নিজে চলাচলের রাস্তাটি পাকা করণ করেছেন। এনিয়েও এলাকায় সাধারন মানুষের মাঝে নানা জল্পনা কল্পনা অব্যাহত রয়েছে। রক্ষক হয়ে যখন ভক্ষকের কাজ করেছেন তাদের জনপ্রতিনিধিত্ব নিয়েও এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা চলছে। ইতোমধ্যে ইউপি সদস্য মাহমুদ মিয়া ও নারী সদস্যা রোকসানা বেগমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করলেও এর প্রতিকার না হওয়ায় তাদের দুর্নীতির মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শেখ হাসিনার নগদ সহায়তার তালিকা পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১শ ৪৭জনের মধ্যে ইউপি সদস্য মাহমুদ মিয়ার ছেলে মুনাইম আহমদ নাইম সহ পরিবার ও ধনাঢ্য আত্মীয়র মধ্যে ১৮ পরিবার এবং নারী সদস্যা রোকসানা বেগমের ছেলে ইমরান হোসেন ইমন সহ ১৩ পরিবারের নাম রয়েছে। পুরো তালিকার মধ্যে ৭টি পরিবারের নামের পাশে ইউপি সদস্য মাহমুদ মিয়ার মোবাইল নাম্বার ও ২জনের নামের পাশে তার ভাই মনর মিয়ার মোবাইল নাম্বার রয়েছে। তালিকায় উল্লেখিত আব্দুল কালাম ইউপি সদস্য মাহমুদ মিয়ার চাচাতো ভাই। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার হরিনগর গ্রামে বসবাস করে আসছেন। ইউপি সদস্য মাহমুদ মিয়ার ভাই মনর মিয়া, ছেলে মুনাইম আহমদ নাইম, চাচাতো ভাইর স্ত্রী ডালি আক্তার, চাচী সুফিয়া বেগম, সুনেছা বেগম, ফুলবানু বিবি, ভাতিজা রিপন আহমদ, চাচাতো ভাই এর স্ত্রী আকলিমা বেগম, ছুরুক মিয়া, চাচাতো ভাই সুনুর মিয়া, চাচাতো ভাই শহিদুল ইসলাম, ভাতিজা শাহ আলম, মোস্তফা কামাল, তার চাচা আকলিছ মিয়া, আফরোজ মিয়া, আজাদ মিয়া, শরিফ উল্যাহ’র নাম রয়েছে। তালিকায় নারী সদস্যা রোকসানা বেগমের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের মধ্যে রাহিমা বেগম, ফখরুল ইসলাম, আজিজুল ইসলাম, মুহিত মিয়া, ফয়সল আহমদ, মনোয়ার হোসাইন, সদস্যার ছেলে ইমরান হোসেন ইমন, ভাসুর চাঁদ মিয়া, ভাতিজা ছুফি মিয়া মামা শুশ্বর কনু মিয়া, স্বামীর খালাতো ভাই আহমদ মিয়া, সিরিয়া বেগমের নাম রয়েছে। ইউপি সদস্য মাহমুদ মিয়া এ প্রতিবেদককে জানান, প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা তালিকা নারী সদস্যাকে নিয়ে প্রস্তুত করে দাখিল করা হয়েছে। তবে আমার ছেলে ও ভাইয়ের নাম মহিলা মেম্বার রোকসানা বেগম দিয়েছেন। নারী সদস্যা রোকসানা বেগম জানান, আমি শুধু আমার ছেলে নাম তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করেছি। কিন্তু অন্য নামগুলো ইউপি সদস্য মাহমুদ মিয়া দিয়েছেন। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম রানার মুঠোফোনে ফোন দিলে ফোনটি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানাযায়নি। জগন্নাথপুর উপজেলা পিআইও অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাইফ উদ্দিন খান জানান, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের তালিকা হাতে পেয়েছি। তালিকাটি এখনও চুড়ান্ত হয়নি। তবে ইউপি সদস্য মাহমুদ মিয়ার ছেলের নাম তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের প্রধানমন্ত্রীর নগদ সহায়তার তালিকাটি সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত অসহায়দের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এলাকাবাসী দাবী জানিয়েছেন।
Leave a Reply