এনামুল কবির মুন্না : মাদক নেশায় যোগ হয়েছে চেতনানাশক ট্যাবলেট, প্রেসক্রিপশন ছাড়া মিলছে ঘুমের ঔষধ। সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার অলিতে গলিতে ফার্মেসী গুলোতে চলছে প্রেসক্রিপশন ছাড়া ঘুমের ঔষধ বিক্রির রমরমা ব্যবসা। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ঔষধ বিক্রির অন্তরালে নেশাজাতীয় ইনজেকশন ও ঘুমের ট্যাবলেট বিক্রয় করছে অধিক মুনাফা লাভের আশায়।
ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিল, গাঁজার পাশাপাশি এবার নেশার রাজ্যে যুক্ত হয়েছে ঘুমের ট্যাবলেট। বিভিন্ন ধরণের ঘুমের ট্যাবলেট মাদক সেবীদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নেশার ক্ষেত্রে।
আইন শৃঙ্খলাবাহিনী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স ঘোষনার পর থেকে মাদক সেবীরা মাদকের বিকল্প হিসেবে ঝুঁকে পড়েছে বিভিন্ন কোম্পানীর ঘুমের ট্যাবলেটের উপরে। হাত বাড়ালেই ঔষুধের ফার্মেসী গুলোতে অনায়াসে মিলছে ঘুমের ট্যাবলেট। দোয়ারাবাজার উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী অঞ্চলে লাইসেন্সবিহীন এবং লাইসেন্সধারী ফার্মেসীতে বিক্রি হচ্ছে ঘুমের ট্যাবলেট। সরকারী নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে দেশের নামী দামী বিভিন্ন কোম্পানীর ঘুমের ট্যাবলেট বিক্রয় করছে ফার্মেসীগুলো।
যদিও সরকারি নীতিমালায় ঘুমের ঔষধ বিক্রির ক্ষেত্রে, ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র প্রয়োজন। কিন্তু দোয়ারাবাজার ফার্মেসী গুলোতে ঘুমের ঔষধ বিক্রি হচ্ছে ডা. এর ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই। যার ফলে মাদকসেবীরা খুব সহজেই মাদকের পরিবর্তে ঘুমের ট্যাবলেটকে নতুন মাদকরুপে সেবন করছে। ঘুমের ট্যাবলেটের মধ্যে রয়েছে সিরামিন সিরাপ ইবনেসিনা কোম্পানী, স্কয়ার লাইজন এএমজি, সেডিল ২০ পিস ৫এমজি, ট্রাইপট্রিন ১০/২৫এমপি, ডরমিটল ৭.৫/১৫ এমজি, রেডিএন্ট কোম্পানীর এবং ল্যাগজুটেনিল ৩এমজি, অরিউন কোম্পানীর গোফাম ৩ এমজি, সেনডোজ কোম্পানীর এক্সিউনিল ৩এমজি, অপসোনিন কোম্পানীর ইজিয়াম ৫এমজি পেইস ২এমজি, ইনসেপটা কোম্পানীর হাইফনোফাস্ট ১৫এমজি, ডিসোপান ২এমজি, ক্লোসান ২এমজি, এসকেএফ কোম্পানীর মিলাম ১৫এমজি।
এগুলো এখন উঠতি বয়স্ক তরুন-তরুনীদের মাঝে আকর্ষনীয় আসক্তির বস্তু হয়ে দাড়িয়েছে। রাত বাড়ার সাথে সাথে দোয়ারাবাজার উপজেলার ফার্মেসীগুলোর সামনে উঠতি বয়স্ক তরুনদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। এইসব ঘুমের ঔষধ গুরুতর অসুস্থ্য, দুর্ঘটনার আহত ও দুশ্চিন্তাগ্রস্থ লোকজনের ঘুমের জন্য ডাক্তারের পরামর্শে ব্যবহার করা হয়। এইসব ঔষধ ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া বিক্রি নিষিদ্ধ হলেও অতি মুনাফার আশায় বিক্রি করছে কিছু অসাধু ঔষধ ব্যবসায়ীরা। অনুসন্ধানে জানা যায় গত বৃহস্পতিবার ১৬ জুলাই দোয়াোবাজারের সন্তোষ রায়ের ছেলে সুমন রায়(১৪) সে প্রেসক্রিপশন ছাড়া নুর ফার্মেসি,সুমন ফার্মেসি ও রিহাম থেকে ১২টি ঘুমের ঔষধ ক্রয় করে বাসায় নিয়ে খেয়ে ফেলেছে।
তাকে অচেতন অজ্ঞান অবস্থায় দোয়ারাবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দিয়েসুস্থ করা হয়। বিপথগামী স্কুল পড়ুয়া ছাত্র থেকে শুরু করে কলেজ পড়ুয়া তরুণ সমাজ আজ ধ্বংসের মুখে পতিত হচ্ছে মাদকরুপী ঘুমের ঔষধের কারনে। প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসি গুলোতে এমন অবাধ উত্তেজক ট্যাবলেট ও সিরাপ বিক্রি হওয়ায় সচেতন মহল ও অভিভাবকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। সচেতন মহলের দাবী ফার্মেসি গুলোতে ওষুধ বিক্রির ক্ষেত্রে ঔষধ নীতিমালার আওতায় আনার যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হোক ।
Leave a Reply