জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ):
জগন্নাথপুর উপজেলার হবিবপুর কেশবপুর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল হাকিমের বিরুদ্ধে দাখিল ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষায় কম নাম্বার প্রদানের অভিযোগের তদন্ত করেছেন বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধি দল। গত ৭ ফেব্রুয়ারী রবিবার বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছালেহ আহমাদ ও বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড সিলেট অঞ্চলের সহকারী পরিদর্শক মো: জাহিদুল হক ছিদ্দিকী সরজমিনে হবিবপুর কেশবপুর ফাজিল মাদ্রাসায় এসে তদন্ত করেন। দরখাস্থকারী ২০২০ সালের দাখিল পরীক্ষার্থী মো: মাসউদুর রহমানের পিতা মো: শুয়াইবুর রহমান সহ এলাকার গন্য-মান্য ব্যাক্তিবর্গের উপস্থিতিতে এই তদন্ত কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। তদন্ত চলাকালে ২০২০ সালের দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহনকারী ১৯ জন পরীক্ষার্থী দাখিল ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষায় বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় লিখিত বক্তব্য প্রদান করেন। লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, হবিবপুর কেশবপুর ফাজিল মাদ্রাসার পরীক্ষা কেন্দ্র ইকড়ছই জামেয়া আলিম মাদ্রাসা । শুধুমাত্র তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি, ক্যারিয়ার শিক্ষা, শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধূলা এর ব্যবহারিক বিষয়ের পরীক্ষা হবিবপুর কেশবপুর ফাজিল মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত হয়। আমরা একটি প্রশ্ন দিয়ে ৩টি বিষয়ের পরীক্ষা দিয়েছিলাম। আমাদের কোন মৌখিক পরীক্ষা গ্রহন করা হয় নাই। হবিবপুর কেশবপুর ফাজিল মাদ্রাসার আরবী প্রভাষক মো: জামিল আহম্মদ তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি , ক্যারিয়ার শিক্ষা, শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধূলা এর ব্যবহারিক বিষয়ের কোন পরীক্ষক ছিলেন না। তিনি এই বিষয়গুলোর শিক্ষক ও নন। আমরা ব্যবহারিক পরীক্ষার ফিস জন প্রতি ১শ ৫০ টাকা করে অফিস সহকারী মাহমুদুল হাসানের নিকট জমা দিয়েছিলাম। পরীক্ষায় মারুফা আক্তার জুমি ও মো: শাকরিন আহমেদ শাহি উপস্থিত ছিলনা।মো: শুয়াইবুর রহমান জানান,তার ছেলে মো: মাসহুদুর রহমান ২০২০সালে হবিবপুর-কেশবপুর ফাজিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে। দাখিল পরীক্ষায় ব্যবহারিক ও মৌখিক বিষয়ে অধ্যক্ষ মো: আব্দুল হাকীমের যোগসাযগে সর্ব নিম্ন নাম্বার প্রদানের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সভাপতি, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রন বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও জেলা প্রশাসক সুনামগঞ্জ বরাবরে আবেদন করেন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে আবেদনের আলোকে গত ২৫ জানুয়ারী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিষ্টার মো: সিদ্দিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক পত্রে পত্র প্রাপ্তির ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (গোপনীয়) ড: মো: হুসাইন মাহমুদ ফারুক, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছালেহ আহমাদ ও বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড সিলেট অঞ্চলের সহকারী পরিদর্শক মো: জাহিদুল হক ছিদ্দিকীকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করেন। এছাড়াও তদন্তকালে শিক্ষার্থীর অভিভাবক সহ অনেকেই অধ্যক্ষ আব্দুল হাকিমের বিভিন্ন দুর্নিতীর বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের অবগত করেন এবং অধ্যক্ষ আব্দুল হাকিমের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থঅ গ্রহনের অনুরোধ জানান। তদন্তকালীন সময় হবিবপুর এলাকার বাসিন্দা জগন্নাথপুর সরকারি কলেরজের প্রভাষক আব্দুর রউফ, জগন্নাথপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর দিলোয়ার হোসাইন, হবিবপুর আশিঘর এলাকার বাসিন্দা আব্দুলর জব্বার, শিক্ষানুরাগী সালাহ উদ্দিন মিঠু, কবির উদ্দিন, ব্যবসায়ী শফিকুর রহমান, সেবুল আহমদ, রুহেল আহমদ, শিক্ষার্থীর অভিভাবক আলা উদ্দিন ও জামাল মিয়া সহ এলাকার বিপুল সংখ্যক লোকজন উপস্থিত ছিলেন। এব্যাপারে হবিবপুর কেশবপুর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল হাকিম জানান, তদন্তদের বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।
Leave a Reply