মোঃ মুকিম উদ্দিন জগন্নাথপুর উপজেলা প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষক কৃষাণীরা আনন্দে মাতোয়ারা এবং তাদের মুখে দেখা যায় আনন্দ ঘন মূহুর্তের রঙ্গিন হাসি।
১০ এপ্রিল শনিবার সরেজমিনে জগন্নাথপুরের নলুয়ার হাওর, মইয়ার হাওর ঘুরে দেখা যায় বোরো জমিতে ফসলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত হাওর গুলো। জমিতে সোনালী পাকা ধান ও আধা পাকা সবুজ ধান সকালে সোনালী রোদে বতাসের তালে তালে দুল খাচ্ছে। কোথাও কোথাও উন্নত জাতের হাইব্রিড ২৮ জাতের ধান ও ঝলক রাজ ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে। তবে এখনো পরোপুরি ভাবে ধান কাটা শুরু হয়নি।
জগন্নাথপুরের কলকলিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের শ্রীধরপাশা গ্রামের মেম্বার লিয়াকত হোসেন অমৃত বলেন আমার জমিতে গত বছরের তুলনায় এবছর অনেক ভাল ফলন হয়েছে। তবে প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে রক্ষা পেলে আমরা আমাদের ফসল সুন্দর ভাবে গোলায় তুলতে পারব।
জগদীশপুর নোয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আবুল কালাম বলেন গেল বছরের তুলনায় এবছর বোরো ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন সামন্য ভাবে ধান কাটা শুরু হয়েছে তবে আগামী দু’এক সপ্তাহের মধ্যে পুরোপুরি ভাবে ধান কাটার ঝুম পড়বে বলে আমি আশাবাদী। তবে লকডাউনের কারনে অন্য জেলা থেকে ধান কাটার লোকজন আসতে বিলম্ব না হলে বৈশাখ মাসের মধ্যে ফসল তুলতে পারব বলে আমি মনে করি।
জগন্নাথপুরে যদিও ধান কাটার উৎসব চলছে তখন জমির ধান গোলায় তুলতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন কৃষক কৃষাণীরা। বড় ধরনের কৃষকরা ধান কাটার মানুষ সংগ্রহের জন্য ব্যস্থ হয়ে ঘুরছেন বিভিন্ন জায়গায়। ছোট ও মাঝারি কৃষকেরা টাকা দিয়ে ধান কাটানোর জন্য ঘুরছেন দিন মজুরদের ঘরে ঘরে।এদিকে স্থানীয় বাজার গুলোতে কৃষি পন্য বিক্রির হিড়িক পড়েছে এবং কৃষাণীরা বাড়ির আশ পাশে ধান শুকানোর খলা (মাঠ) প্রস্তুত করার কাজে রয়েছেন ব্যস্ত আবার কোন কোন জায়গায় বাড়ির চাদে ধান শুকানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষানীরা।
এবছর জগন্নাথপুর উপজেলার হাওরগুলোতে প্রায় ২০ হাজার ৩৩০ হেক্টর বোরো জমি আবাদ হয়েছে। সরকারী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ১ লাখ ২১ হাজার ৮৪২ হেক্টর ধান। তবে গত বছরের তুলনায় এবছর বোরো ধানের বাম্পার ফলনে সরকারী লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষকরা।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার জানান জগন্নাথপুরে গত বছরের তুলনায় এবছর বোরো ধানের ফলন ভালো হওয়ায় এবছর সরকারী লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। কিছুদিন পর প্রতিটি হাওরে ধান কাটার ধুম পড়ে যাবে। তবে শিলা বৃষ্টি না হলে কৃষকরা নিশ্চিতে তাদের ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।
Leave a Reply