ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা খাদ্যগুদামের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আরিফুর রহমান মজুমদার দিলীপ তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনো সংবাদ প্রকাশ না করে বিষয়টি শেষ হয়েছে এমন সংবাদ প্রকাশ করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশকারী সাংবাদিকের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ বিলকিস ও দপ্তর সম্পাদক গোলাম আজহারুল ইসলাম দিদারের মাধ্যমে সাংবাদিকদের চায়ের দাওয়াত দিয়ে শুক্রবার সকালে তিনি এ অনুরোধ জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম পলাশ, চয়ন কান্তি দাস, সাজিদুল হক সাজু। কিন্তু কতিপয় কিছু সাংবাদিক বিষয়টিকে অন্য দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্ঠা করে বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ করে যে সাংবাদিক এনামুল হক (এনি) আরিফুল রহমান মজুমদার দিলীপের কাছে সংবাদ প্রকাশ করার কারণে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চেয়েছে। যা সম্পূর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ বিলকিস। তিনি বলেন, ‘ধর্মপাশা খাদ্যগুদামে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাংবাদিকদের মধ্যে ঘটে যাওয়া বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দিয়েছি। আমার মাধ্যমে দিলীপ মজুমদার সাংবাদিকদের চা খাওয়ার দাওয়াত দিয়েছিলেন। কিন্তু সংবাদ প্রকাশের জন্য দিলীপ মজুমদারের কাছে সাংবাদিক এনামুল হক ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। এনামুল হক (এনি) একজন প্রগতিশীল সাংবাদিক। তাকে জড়িয়ে মিথ্যে সংবাদ প্রকাশ করা দুঃখজনক।
যারা সাংবাদিকদের নিয়ে বিভ্রান্তি কর সংবাদ পরিবেশন করছে তাদের ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আরিফুর রহমান মজুমদার দিলীপ বলেন, আমার বক্তব্য না নিয়েই নিউজ দিয়েছে। আমাকে নিয়ে লিখতে গিয়ে অন্য সাংবাদিকদের জড়াচ্ছে কেন? আমি তাদের (দিলীপ মজুমদারের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশকারী) ডেকে এনে চা খাইয়েছি। যারা বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে আমি তাদের এ নিয়ে লিখতে বলিনি।
উল্লেখ্য, গত রোববার সুনামগেঞ্জর শাল্লা থেকে কিনে আনা নিম্নমানের মোটা ধান অবৈধভাবে ধর্মপাশা খাদ্যগুদামে প্রবেশের চেষ্টা চালায় দিলীপ মজুমদারের ছোট ভাই সম্রাট মজুমদার। এ সময় কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ বিষয়টি ধর্মপাশা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইসহাক মিয়া ও সাধরণ সম্পাদক এমএমএ রেজা পহেলসহ স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিককের জানালে তারা বিষয়টি দেখতে সেখানে যায়। এ সময় দেখা যায় সম্রাট মজুমদার একটি বাল্কহেড নৌকায় করে ৫৬ জন কৃষকের ধান নিয়ে এসেছেন। ৫৬ জন কৃষকের ধান দেওয়ার জন্য ৫৬ জন কৃষক কার্ড নিয়ে আসবে কি না সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) সুজন চন্দ্র রায় বলেন, ‘কার্ডগুলো সে (সম্রাট) কৃষকদের ম্যানেজ করে এনেছে। এটাতে আর অসুবিধা নাই।’ এছাড়াও তিনি জানান, ৫৬টি কার্ডের মধ্যে ২০টি কার্ড পেয়েছেন এবং বাকি কার্ডগুলো সম্রাট পরে দিবে। সাংবাদিকরা কৃষকদের উপস্থিতিতে ধান নেওয়ার জন্য ওসিএলএসডিকে বললে সম্রাট মজুমদার এসে বলেন, ‘তোমরারে কি কৃষক আইন্যা দেহানি লাগবো? আমার পয়সা দিয়ে আমি ব্যবসা করতে আইছি।’ পরে সম্রাট তার ভাই দিলীপ মজুমদারকে খবর দিয়ে খাদ্যগুদামে আনেন। এ সময় সেখানে কোনো কৃষক উপস্থিত ছিলেন না। দিলীপ মজুমদার খাদ্যগুদামে পৌঁছেই উপস্থিত সাংবাদিকদের গালমন্দ, হুংকার ও চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। এ সময় দিলীপ মজুমদার বলেন, ‘মাইর করলে লাঠি লইয়া আয়, ধান দিলে দেখি কে ফিরায়? আমরা কি বানের জলে ভাইস্যা আইছি। যদি কই খাইয়ালবাম খাইয়াই হালবাম।’ দিলীপ মজুমদারের উপস্থিতিতে সম্রাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এমএমএ রেজা পহেলের গায়ে ধাক্কাধাক্কি করে। এ সময় সাংবাদিকদের সাথে আওয়ামী লীগ নেতা ও তার ভাই অশোভন আচরণ করায় ওসিএলএসডি দুঃখ প্রকাশ করেন। বিষয়টি নিয়ে পরের দিন সমকাল, কালেরকণ্ঠ, যায়যায়দিনসহ বিভিন্ন জাতীয় ও কয়েকটি স্থানীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
Leave a Reply