স্টাফ রিপোর্টার:: সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার ৫ নংচিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের রানীগঞ্জ থেকে সালদিগা পর্যন্ত রাস্তার সংস্কার কাজে বাঁধা প্রদানে প্রতিবাদে যুক্তরাজ্যে লন্ডনে সংবাদ সম্মেলন করেছে নলুয়া প্রবাসী সংঘ এনপিএস
রবিবার লন্ডন সময় সন্ধ্যা ৭ ঘটিকায় উপস্তিত সাংবাদিকদের সামনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন আবিদুল ইসলাম আরজু,এ সময় উপস্তিত ছিলেনঃ- আসলাম উদ্দিন, ইলিয়াস মিয়া, সুজাত মিয়া, রুহুল আমিন মুল্লুক, সুজন রশিদ, আবিদুল ইসলাম আরজু, সেবুল মিয়া, সাইদুল মিয়া, সুহেল মিয়া, মিজান রশিদ, মনির হোসেন , আফসার উদ্দিন , মাসুক মিয়া, জয়নুল হক, ফয়জুল হক।
লিখিত বক্তব্যে আবিদুল ইসলাম আরজু বলেনঃ- মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত স্বদেশের আহবানে প্রবাসীরা বার বার ছুটে গেছে নিজ মাতৃভূমিতে। স্বদেশীদের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে প্রবাসীরা কাজ করে গেছে দেশ ও দেশের প্রতিটি সংকটময় মুহূর্তে। নিঃস্বার্থভাবে প্রবাসীরা স্থির থাকতে পারি না, ছুটে যাই নিজ নিজ এলাকায়। প্রবাসে থেকেও নাড়ির টানে নিজ মাতৃভুমির উন্নয়ন করতে গিয়ে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তির রোষানলে পরে নির্যাতনে পরে দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আজ আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি, আমাদের এলাকার জনগন ও শিক্ষার্থীদের দুর্দশা নিরসনের জন্য কিছু দাবি দাওয়া পেশ এবং আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করার জন্যই মূলত পূর্ব নির্ধারিত আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের আহবান।
সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানাধীন ০৫ নং হলদিপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত রানীগঞ্জ থেকে সালদিঘা পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার কাচা আধা ভাঙা রাস্তাটি চলাচলের প্রায় অনুপোযোগী থাকে বছরের অধিকাংশ সময়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী এই এলাকার জনগন, ছাত্র ছাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। খানাখন্দে ভরা, হাটু পরিমান কাদা মাড়িয়ে স্কুল কলেজে যাতায়াত করতে হয় ছাত্র ছাত্রীদের। এলাকার একমাত্র রাস্তাটি দীর্ঘদিন যাবৎ কোনো সংস্কার না করার ফলে এই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ ও স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের চরম ঝুকির মধ্যে চলাফেরা করতে হয়। উক্ত রাস্তার বিষয় নিয়ে আমরা প্রবাসীরা উদ্বিগ্ন ছিলাম, যার পেক্ষিতে ২০১৯ সালের প্রথম দিকে আমরা কয়েকজন প্রবাসী সমন্বয়ে আমাদের ০৫ নং চিলাউরা হলদিপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জনাব আরশ মিয়ার সাথে যোগাযোগ করি, এবং এলাকার মানুষের দুর্দশার কথা বিবেচনা করে রাস্তাটি সংস্কারের অনুরোধ করলে তিনি দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, প্রতিশ্রুতির প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও তিনি এলাকার মানুষের চলাচলের রাস্তাটি মেরামত করে দেননি কিংবা সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেন।
এমতাবস্থায় এলাকার কয়েক হাজার মানুষ ও কয়েক শত স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের চরম দুর্দশার কথা চিন্তা করে ২০২০ সালের জুন মাসে আমরা আমাদের নলুয়া প্রবাসী সংঘের পক্ষ থেকে রানীগঞ্জ থেকে সালদিঘা পর্যন্ত এই ভাংগা রাস্তাটি ছয় লক্ষ টাকার প্রাথমিক অনুদানে পুন-নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহন করি। এই প্রেক্ষিতে যথাযথ নিয়ম মেনে এলাকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান আরশ মিয়া কে প্রবাসীদের উদ্যোগে রাস্তাটি সংস্কারের বিষয়টি অবিহিত করে উনার অনুমতি চাইলে তিনি যে তার দেওয়া পূর্ব প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেননি, সে কথা স্বীকার করে আমাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং রাস্তা সংস্কার কাজে আমাদের সংগঠনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে
যার প্রেক্ষিতে গত ২৪ জুন ২০২০ইং তারিখে চেয়ারম্যান আরশ মিয়াকে প্রধান অতিথি করে এবং এলাকার মুরুব্বিদের উপস্তিতিতে রাস্তা সংস্কার কাজের এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রসঙ্গত – উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগে পার্শ্ববর্তী গ্রামের একজন চেয়ারম্যান’কে পেয়ে প্রশ্ন করেন দীর্ঘদিন যাবত রাস্তাটি ভাঙা থাকলেও এলাকার চেয়ারম্যান হিসেবে কেন আপনি এতদিন ধরে রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেননি? এ নিয়ে চেয়ারম্যান এবং ঐ ব্যক্তির মধ্যে সামান্য কথা কাটাকাটি হয় যা পরবর্তীতে উপস্তিত এলাকার মুরুব্বিরা সাথে সাথে বসে মিমাংসা করে দেন এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি সুন্দর ও সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়।
কিন্তু পরদিন চেয়ারম্যান ক্ষমতার অপব্যবহার করে জগন্নাথপুর থানায় গিয়ে আমাদের সংগঠনের কয়েকজন প্রবাসী সদস্যকে আসামী করে একটি মিথ্যা মামলা করেন। এবং সেই সাথে নিজের ক্ষমতার বলে প্রশাসনের সহযোগিতায় রাস্তাটি সংস্কার কাজ বন্ধ করে দেন। বিষটি নিয়ে আমাদের নলুয়া সংঘের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করলে চেয়ারম্যান আরশ মিয়া একেক সময় একেক ধরনের টালবাহানা কথা বলতে থাকেন। কি কারনে প্রবাসীদের উপর মিথ্যা মামলা দায়ের করা হল এবং কেন রাস্তার কাজ বন্ধ করা হল চেয়ারম্যান তার কোন সদুত্তোর দিতে পারেননি।
চেয়ারম্যান আরশ মিয়ার কাছ থেকে আমরা সন্তোষজনক কোনো জবাব না পেয়ে আমাদের নলুয়া প্রবাসী সংঘের পক্ষ থেকে মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী জনাব এম এ মান্নান এম পি মহোদয় এর সাথে যোগাযোগ করি। মন্ত্রী মহোদয় আমাদের কথা শুনেন এবং বিষয়টি মীমাংসা করে, দ্রুত রাস্তার সংস্কার কাজ করার অনুমতি দেওয়ার জন্য জগন্নাথপুর থানা ইউ এন ও বরাবর লিখিত ভাবে নির্দেশনা দেন।
মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের চিঠির প্রেক্ষিতে জগন্নাথপুর থানার ইউ এন ও বিষয়টি অবগত হয়ে আমাদের সংগঠনের সদস্য ও এলাকার মুরুব্বিদের নিয়ে চেয়ারম্যান আরশ মিয়ার সহ ইউ এন ও অফিসে বসেন চেয়ারম্যান আরশ মিয়ার কাছে প্রবাসীদের উপর মামলা এবং রাস্তার কাজ বন্ধের কারন জানক্তে চাইলে সেখানেও কোনো সদুত্তোর দিতে পারেন নি, পরে উপস্তিত সকলের কাছে তার পূর্ববর্তী দিনের ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে রানীগঞ্জ থেকে সালদিঘা পর্যন্ত ৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসেন।
Leave a Reply