সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাওঁ ইউনিয়নের ঠাকুরভোগ গ্রামে লম্পট প্রেমিক কর্তৃক এক কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন বিভিন্ন জায়গাতে আটকে থাকা ধর্ষণের ফলে ঐ কিশোরী এখন এক কন্যা সন্তানের জননী। এই কিশোরীর নাম হলো নীলিমা বেগম(২০)। সে ইউনিয়নের ঠাকুরভোগ গ্রামের হতদরিদ্র দিনমুজুর মোঃ নুর ইসলামের মেয়ে। তিনি স্বামীর অধিকার ও সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের দাবীতে সমাজের মানুষজনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও বিচার পাননি নির্যাতিতা নীলিমা বেগম ।
তিনি বুধবার নিজে বাদি হয়ে ধর্ষনকারী সাহেল খান(২৫)সহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সাহেল খান একই গ্রামের মৃত ইসলাম খানেঁর ছেলে। তাছাড়া অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন তার মা মোছা. ছালেমা খানম,তার সহোদর মো. সেলিম খানঁ ও মো. রাহেল খানঁ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায় গত ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল প্রেমিক প্রেমিকা দুজন একই গ্রামের বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে বাদী নীলিমা বেগমকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল অভিযুক্ত সাহেল খানঁ। এই কিশোরী বার বার প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করলেও অবশেষে সুচতুর সাহেল খানের প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হন এই কিশোরী পরবর্তীতেঁ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে লম্পট একই সালের ১২ এপ্রিল গ্রামের সহজ সরল কিশোরী নীলিমাকে নিয়ে গোপনে ঢাকায় গাজীপুরে যান। সেখানে একটি বাসায় আটকিয়ে রেখে কিশোরীকে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে মাসের পর মাস জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন সাহেল খানঁ। এছাড়া চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গাতে নিয়ে স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে মাসের পর মাস মেয়েটিকে ধর্ষনের ফলে কিশোরী অন্তসত্তা হওয়ার পর প্রেমিক সাহেল খানঁকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে সাহেলসহ তার স্বজনরা বিভিন্নভাবে মেয়েটিকে প্রাননাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। এক পর্যায়ে শারিীরিক নির্যাতনের ফলে ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারী মেয়েটি গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে ঢাকা গাজীপুরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করার পর সেখানে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। তিনদিন ক্লিনিকে থাকার পর নবজাত কন্যা শিশুটিকে নিয়ে প্রেমিক প্রতারক সাহেল খান তার গ্রামের বাড়ি ঠাকুরভোগে পিতা মাতার কাছে আসলে সাহেলের পরিবারের লোকজন মেয়েটি গ্রহন না করে উল্টো তাকে শারীরিক নির্যাতন করে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেন। বর্তমানে নবজাত মেয়ে শিশুটির বয়স ১০মাস অতিবাহিত হলেও প্রতারক স্বামী এখন স্ত্রী নীলিমা বেগম ও নবজাত শিশু মেয়েটিকে অস্বীকার করে আসছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমানে ১০মাসের শিশু সন্তান তানিশা আক্তার ফারিহাকে নিয়ে কিশোরী নীলিমা বেগম বাড়ি ছাড়া হয়ে স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন । ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় অসহায় নীলিমা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
এ ব্যপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ কাজি মোক্তাদির হোসেন চৌধুরী অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে সত্যতা পাওয়া গেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
Leave a Reply