সিলেট প্রতিনিধি::
সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ীস্থ জহির তাহির মেমরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক অরবিন্ধু ভট্টাচার্য করছেন বিলাস বহুল বহুতল ভবন ভাড়া নিয়ে অবৈধ কোচিং বানিজ্য । করোনা সংক্রমণরোধে ‘‘নেই কোনো স্বাস্থবিধি’’। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব নয় বলে কোচিং সেন্টার বন্ধে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। কিন্তু করোনার মতো মরণব্যাধির মধ্যেও থেমে নেই কোচিং বাণিজ্য। অনেক নামিদামি কোচিং সেন্টার থেকে ছয় মাস বা এক বছরের ফি এককালীন পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। অগ্রিম ফি পরিশোধ না করলে কোচিং সেন্টারের ক্লাসে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হচ্ছে না।
১১ নভেম্বর ২০২০ ইং রোজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২৫ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে কোচিং পরিচালনা করছেন জহির তাহির মেমরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক অরবিন্ধু ভট্টাচার্য। এতে সামাজিক দূরত্বের কোনো বালাই নেই। শিক্ষকের মুখে নেই মাস্ক।
অভিভাবকরা জানিয়েছেন, করোনার কারণে আর্থিক সংকটে আছে অনেকে। সংসারের নিয়মিত খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন অধিকাংশ অভিভাবক। এমন পরিস্থিতিতে কোচিং এর ফি পরিশোধের এমন চাপ দেয়া অমানবিক। এমতাবস্থায় কোচিং ফি পরিশোধ অভিভাবকদের কাছে বোঝা হয়ে দাড়িয়েছে।
কোচিং চলা কালীন সময়ে জহির তাহির মেমরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক অরবিন্ধু ভট্টাচার্যের কাছে অবৈধ কোচিং এর বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘আমি এটা সম্পুন ভুুল করেছি। আর এরকম কাজ করবো না। আমি কোচিং সেন্টার বন্ধ করে দিবো।’’
শিক্ষাবিদরা কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে কোচিং বাণিজ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিভাবকদের আইনের আশ্রয় নেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
শিক্ষক নামধারী কিছু সুযোগ সন্ধানী ব্যক্তি কোচিং বাণিজ্য করে অবিভাবকদের বেকায়দায় ফেলে মোটা অংকের অর্থ আদায়ের এই কৌশল বন্ধের দাবি জানিয়ে অবিভাবকরা অরও বলেন, যে সব শিক্ষকরা কোচিং করান তাদের অধিকাংশই নামিদামি বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকতা করেন। তারা ক্লাসে ঠিকমতো না পড়িয়ে কোচিং এ ব্যস্ত। শিক্ষার্থী ও অবিভাবকরা কোচিং সেন্টারগুলোর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। করোনার মধ্যে আর্থিক সংকটেও কোচিং বাণিজ্য বন্ধ হয়নি বরং বেড়েছে।
ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যমের বিভিন্ন বিষয় পড়ানোর জন্য সিলেটে সাধারণ মানের শিক্ষকের পাশপাশি রয়েছে নামিদামি কিছু শিক্ষক। করোনার আগে এসব শিক্ষকরা কোচিং সেন্টারে প্রতিদিন একাধিক ব্যাচ করে ক্লাস নিত। একটি ক্লাসের সময়সীমা ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট থেকে ২ ঘণ্টা ছিল। নামিদামি শিক্ষকদের প্রতি ক্লাসে একটি ব্যাচে ৩০ থেকে ৫০ জন পর্যন্ত শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকত। কোচিং সেন্টারে ক্লাস করিয়ে বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমের একজন শিক্ষক মাসে বিশাল অংকের টাকাও আয় করেছে।
করোনা ব্যাধি সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বব্যাপী ব্যবসা বাণিজ্যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিও স্থবির হয়ে পড়েছে। মন্দা চলছে অধিকাংশখাতে।
একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিধ বলেন, করোনাকালীন এই আর্থিক সংকটে কোচিং নিয়ে এই বাণিজ্য করা উচিত নয়। যারা এই কাজ করছে তারা অমানবিক আচরণ করছে। সরকারের উচিত এখনই এই বাণিজ্য বন্ধ করা। অবিভাবকদের প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেয়া উচিত।
Leave a Reply