চট্রগ্রাম সংবাদদাতা ঃ- শওকত হোসেন, পুলিশের একজন সদস্য। কিন্তু তাঁর পরিচয় শুধু এতটুকু নয়, তিনি মানবিক পুলিশ সদস্য হিসেবেই পরিচিত।ডাস্টবিনের পাশে কোনো ভারসাম্যহীন অসুস্থ কেউ যার এক পা অর্ধেকজুড়ে পচে গেছে, এমন রোগী থেকে সবাই দূরে থাকলেও পরম যতেœ তাদের চিকিৎসা দিয়ে ভালো করে তুলেন মুহাম্মদ শওকত হোসেন।মুহাম্মদ শওকত হোসেন বর্তমানে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মানবিক পুলিশ শাখার টিম লিডার হিসেবে কর্মরত আছেন। ১০ বছর ধরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে কাজ করছেন। মুহাম্মদ শওকত হোসেনের বাড়ি নোয়াখালীর কবিরহাটে। তাঁর বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা।প্রত্যেক দিনই শওকত হোসেন কোন না কোন ভারসাম্যহীন রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে এসে সুস্থ করে তুলছেন। অসহায় এসব রোগীর সেবায় তাঁর বেতনের অর্ধেকের বেশিই শেষ হয়ে যায়। এসব রোগীকে দেখভাল করতে গিয়ে গত ১০ বছর ধরে নিজের জন্য একটি নতুন পোশাকও কিনতে পারনেনি তিনি।সহর্কমীর পোশাক পরেই বিভিন্ন পারিবারিক ও অফিসের অনুষ্টানে যেতেন তিনি ।মুহাম্মদ শওকত হোসেনের মানবিক পুলিশ হয়ে ওঠার গল্প শওকত হোসেন পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে ২৪তম ব্যাচে যোগদান ২০০৫ সালে। তখন তার মূল বেতন ছিলো ২ হাজার ৮৫০ টাকা। সবকিছু মিলিয়ে বেতন পেতেন ৫ হাজার টাকা। ওই সময় আর্থিক অনটনে দিন অতিবাহিত করতেন। চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথা বললে তার মুক্তি যোদ্ধা বাবা ধৈর্য্য রাখতে বলতেন।বাবার অভয়ে তার পুলিশে পথচলা শুরু। ২০০৫ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ঢাকায় র্কমরত ছিলেন। এরপর বদলি হয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে আসেন। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষার অধীনে মেডিক্যালের ওপর তিন বছরের ডিপ্লোমা ও দুই বছরের প্যারা মেডিক্যালের বিষয়ে লেখাপড়া করেন।২০০৯সালে কিছুদিন রাঙামাটিতে র্কমরত থাকার পর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে বদলি হন শওকত হোসেন। রাঙামাটি থেকে আসা আহত পুলিশ সদস্যদের সেবা দেওয়ার দায়িত্ব নিয়ে এক সময় ওটির ইনর্চাজ হয়ে যান তিনি।তখন থেেক তার রো’গীর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠে। ভারসাম্যহীন অ’সুস্থ রো’গীকে হাসপাতালে এনে সুস্থ করে তোলার যাত্রা শুরু এখান থকেইে।প্রথম দিকে একা কাজ করলেও এখন তার সহযোগী আছেন ১০জন।শওকত হোসেন জানান, রাস্তার পাশে পড়ে থাকা রো’গী, আমি মনে করতাম,এই মানুষটি-তো আমি ও হতে পারতাম বা আমার ভাইও হতে পারতো। এইভাবেনিজে উদ্যোগী হয়ে অ’সুস্থ রোগীদের হাসপাতালে এনে সুস্থ করে তুলতাম।আরও জানান,গত ১০বছরে নিজের জন্য একটি ও নতুন কাপড় কিনেননি উল্লেখ করে সুপারম্যান খ্যাত এই পু’লশি সদস্য জানান, শত শত রো’গীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। নিজের বেশিরভাগ টাকা এসব রো’গীর পেছনে চলে যাওয়ায় ১০ বছরে নতুন কোনো পোশাকও কিনেননি তিনি।বিভিন্নি অনুষ্ঠানে যেতাম সহর্কমীর পোশাক পরে।পরিচিতজনকে বলতাম, আমার কিছু কাপড়-চোপড় দরকার গরীব মানুষের জন্য। তখন তারা যে কাপড়গুলো দিত তা থেকে অ’সুস্থ রো’গীকে দিতাম, নিজেও পড়তাম।আমার আশা, দেশের মানুষ এসব রো’গীর সেবায় জন্য এগেিয় আসবেন। সবাই এগেিয় এলে তখনই আমার পরিশ্রম র্সাথক হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন শওকত হোসনে।
Leave a Reply