সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: গত কয়েকদিনের টানা অবিরাম বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানি বাড়তে থাকায় সুনামগঞ্জর জেলা শহরের কিছু কিছু এলাকায় রাস্তাঘাট ও বাড়িবাড়ি থেকে পানি নামতে শুরু করলেও জেলার ছাতক দোয়ারাবাজার, তাহিরপর বিশ্বম্ভরপুর ,দক্ষিণ সুনামগঞ্জ,দিরাই ও শাল্লাসহ ১১টি উপজেলার ৩২টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ ।
পানি উন্নয়ন বোড জানা যায়,গত ২৪ ঘন্টায় আজ সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত শহরের ষোলঘর পয়েন্টস্থ সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ,যা গতকালের চেয়ে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত ৩২ সেন্টিমিটার কম বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় ১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ছাতক সুনামগঞ্জ ও সিলেটের রাস্তা পানির নীচে তলিয়ে যাওয়ায় এবং জেলা শহরের সাথে বিশ্বম্ভরপুর ও দিরাই শাল্লার সাথে এখনো সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এদিকে জেলা শহরের আশপাশের দুই শতাধিকের উপরে অসহায় পরিবার সুনামগঞ্জ সরকারী কলেজে আশ্রয় নিয়ে মানবেতন জীবনযাপন করেছেন। তাদের অভিযোগ গতকাল বিকেলে সদর উপজেলা প্রশাসন তাদের মধ্যে শুকনো খাবার দিলেও আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত তারা উপবাস থাকলেও তাদের খোজঁ খবর কেউ নিচ্ছেন না এমন অভিযোগ তাদের।
এদিকে সবচেয়ে বেশী বুঝিতে রয়েছে জেলার ছাতক উপজেলা। এই উপজেলায় ইতিমধ্যে তিনটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ছাতকে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন বলে উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ শহরের কাজির পয়েন্ট,উকিলপাড়া,নতুনপাড়া,বড়পাড়া সাহেববাড়ি ঘাট,ষোলঘর হাজিপাড়া,জামতলাসহ অধিকাংশ এলাকার বাসাবাড়ি রাস্তাঘাটের পানি কিছুটা নামতে শুরু করলেও অধিকাংশ বাসাবাড়ি এখনো পানির নীচে রয়েছে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায় সূত্রে জানা যায়,আজ সোমবার আকাশের অবস্থা একটু ভাল থাকলেও জেলার নি¤œাঞ্চলে পানি বাড়তে থাকায় জেলার প্রতিটি উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং বন্যায় প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় ৫০ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হযেছেন।
জেলা প্রশাসন জেলায় বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজনের জন্য খাদ্য সহায়তা হিসেবে ৪১০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ২৯ লাখ টাকা বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের হাতে পৌছে দেয়া হয়েছে এবং ৪ হাজার ৭৫২ পরিবারের মাঝে শিশু খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সহিবুর রহমান জানান,ইতিমধ্যে গত কয়েকদিনের টানা অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে জেলা শহর সহ কয়েকটি উপজেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। যেভাবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে তাতে বণ্যার একটি আশংঙ্কা রয়েছে বলে জানান।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানান, আজ সোমবার বৃষ্টিপাতের পরিমান অনেকটা কম থাকায় বিভিন্ন জায়গাতে পানি কমতে শুরু করেছে। তিনি জানান জেলায় ৭৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং ১৪৮টি পরিবারকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সংখ্যা দাড়িঁয়েছে প্রায় ৫০ হাজার। জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তার জন্য ইতিমধ্যে ৪১০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ২৯ লাখ টাকা বিভিন্ন উপজেলায় নির্বাহী অফিসারের নিকট পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply