দোয়ারা প্রতিনিধি-:: গত তিনদিনের টানা বর্ষণ ও ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা অব্যাহত পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে আবারও পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন শতাধিক গ্রামের লাখো মানুষ। উপর্যুপরি দু’দফা বন্যার পানি এখনও পুরোদমে নামেনি বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট থেকে। তবুও থামেনি প্রাকৃতিক দূর্যোগের আগাসনি থাবা।
ফলে তৃতীয় দফা বন্যায় নদীনালা, খালবিল, হাওর-বাওর, মাঠঘাট, জল স্থল আবারও একাকার হয়ে পড়ায় গবাদি পশুসহ সর্বক্ষেত্রেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন বানভাসি মানুষজন। অধিকাংশ টিউবওয়েল পানিতে নিমজ্জিত হওয়াসহ স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় পেটের পীড়া ও চর্মরোগসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের উপসর্গ দেখা দিয়েছে বানভাসি এলাকায়। এদিকে দু’দফা বন্যার পানি ধীরগতিতে ক্রমশ কমতে শুরুর ভেতর দিয়েই তৃতীয় দফা বন্যার করাল গ্রাসে সবক’টি সড়ক আবারও তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে সকল ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ একেবারেই বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
এ ছাড়া উঠতি আউশ, আমনের বীজতলা, সবজি খেত ও মাছের খামারগুলো প্রথম দফা বন্যায় ভেসে যাওয়ায় কোটি কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হন হাজার হাজার পরিবার। তবুও ক্ষান্ত হননি কৃষিজীবী ও মৎস্যজীবী পরিবারগুলো। বুকে সাহস আর নিরন্তর আশা নিয়ে ভেসে যাওয়া পুকুরগুলোতে আবারও মাছের পোনা ছাড়াসহ তড়িঘড়ি করে বীজতলায় আবারও বীজ বুনেছিলেন।
কিন্তু বিধি বাম ! দু’দফা বন্যার রেশ না কাটতেই তৃতীয় দফা বন্যা ও ঢলের তোড়ে আবারও সবকিছু ভেস্তে যাওয়ায় এখন চোখে সর্ষেফুল দেখছেন তারা। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় সুরমাসহ উপজেলার সুরমাসহ সকল নদীর পানি বিপদসীমার তিন ফুট উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নিম্নাঞ্চলসহ উপজেলার শত শত বাড়িঘরে হাটু ও কোমর সমান পানি বিদ্যমান। পরপর তিন দফা ঢলের তোড়ে শতাধিক কাঁচা ঘরদরজা ধসে গিয়ে পানিতে ভেসে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোনিয়া সুলতানা বলেন, বন্যা মোকাবেলায় সার্বক্ষণিক মনিটরিংসহ কন্ট্রোলরুম খোলা রয়েছে। এলাকা পরিদর্শন ছাড়াও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ বানভাসিদের মাঝে শুকনো খাবার প্যাকসহ বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। দু’দফা বন্যার রেশ কেটে উঠার আগেই সপ্তাহকালের ব্যবধানে ফের তৃতীয় দফা বন্যা শুরু। এবারের বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। তবে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনে আমাদের সকল তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
Leave a Reply