জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:-
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের প্রভাবশালী সিরাজ আলীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও বিচার পাচ্ছেননা বলে অভিযোগ করেছেন শতবর্ষী হাজি আব্দুল গফুর। আব্দুল গফুর জানান, প্রভাবশালী সিরাজ আলী ধনাঢ্য হওয়ার কারনে স্থানীয় ইউপি সদস্য সহ এলাকার মাতব্বরদের ম্যানেজ করে চালিয়ে যাচ্ছে অমানবিক কার্যক্রম। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে নিরীহ আব্দুল গফুর ২০২০সালের ২৯ জুলাই পাইগাঁও ইউপি গ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করেন। গ্রাম আদালত পর পর ৩ বার সমন জারি করার পরও প্রভাবশালী সিরাজ আলী অনুপস্থিত থাকায় ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর গ্রাম আদালত আইন ২০০৬ (সংশোধিত-২০১৩) এর ধারার ৫এর উপধারা ৫ এর ’খ” মোতাবেক আবেদনকারী বিচার্য্য বিষয়ে উপযুক্ত আদালতে মামলা করার লক্ষ্যে আবেদন ফেরত প্রদান করেন। আব্দুল গফুর তার মালিকানা যাতায়াতের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ঠির অভিযোগে ২০২০সালের ১০ অক্টোবর জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ করা হয়। অভিযোগটি তদন্তের জন্য ইউনিয়ন ভূমি অফিস পাইলগাঁও রানীগঞ্জে প্রেরন করলে ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাফিজ উদ্দিন ২০২১সালের ১৬মার্চ প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন সিরাজ আলী কর্তৃক হাজি আব্দুল গফুরের যাতায়াতের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি সত্যতা পান। সিরাজ আলী কর্তৃক আব্দুল গফুরের বাড়ির যাতায়াতের রাস্তায় গর্ত খনন ও রড সিমেন্টের পালা ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ঠি করেছেন। ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা প্রতিবেদন দেওয়ার পরও কোন ব্যবস্থা গ্রহন না হওয়ায় নিরুপায় হয়ে আব্দুল গফুর সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেন। জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিলে তিনি বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জগন্নাথপুর থানায় প্রেরন করা হয়। জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি তদন্তের জন্য থানার এস আই শামীম আহমদকে নির্দেশ দেন। জগন্নাথপুর থানার এস আই শামীম আহমদ জানান, আমি বিষয়টি তদন্ত করেছি। অসুস্থ থাকায় প্রতিবেদন দিতে পারিনি। হাজী আব্দুল গফুর ২৫/০৯/২০২১ ইং তারিখে সিরাজ আলীকে প্রধান আসামী করে জগন্নাথপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখ করেন বিবাদীগন একদল ভুক্ত উগ্র দাঙ্গবাজ, সন্ত্রাসী, খুনিয়া ও পরধন লোভী প্রকৃতির লোক। বিবাদীদের সাথে জায়গা জমি সহ নানা বিষয়াদি নিয়া মামলা মোকদ্দমা, মনমালিন্য ও শত্রুতা চলিয়া আসিতেছে। উক্ত শত্রুতার আক্রোশে বিবাদীগন বহুদিন যাবত আমাদেরকে নানাভাবে প্রাণে হত্যাসহ মারাতক ক্ষতিসাধনে হীন চেষ্টায় লিপ্ত থাকিয়া সুযোগের সন্ধানে থাকে। গত ২৩/০৯/২০২১ইং তারিখ বৃহস্পতিবার বিকাল অনুমান ০৫.৩০ঘটিকার সময় উপরোক্ত সমুহ বিবাদীগনসহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন বিবাদী হাতে কোদাল নিয়া আমার চলাচলের রাস্তা কাটিতে আরম্ভ করিলে আমি ঘটনাস্থলে আসিয়া বিবাদীগনকে বাঁধা প্রদান করিলে বিবাদী সিরাজ আলী হুকুম দেয় যে শালার বেটারে বাঁধা দেওয়ার সাধ মিটাইয়া দাও। উক্ত হুকুমের সাথে-সাথে বিবাদী আবু বক্কর তাহার হাতে থাকা কোদাল দিয়া আমাকে মাথা লক্ষ্য করিয়া প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে ছেদ মারিলে স্বাক্ষী আব্দুল মোতালিব তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে আসিয়া আমাকে প্রাণে রক্ষা করেন। পরে বিবাদীগন আমাকে পূনরায় মারপিট করার জন্য আক্রমন করিলে আমার ও স্বাক্ষী আব্দুল মোতালিবের শোর চিৎকারে উপরোক্ত স্বাক্ষীগন ঘটনাস্থলে আসিয়া আমাকে বিবাদীদের হাত হইতে রক্ষা করেন। বিবাদীগন চলিয়া যাওয়ার সময় এই বলিয়া হুমকি দেয় যে, এই ব্যাপারে কোন প্রকার মামলা মোকদ্দমা দায়ের করিলে আমাকে এক সপ্তাহের মধ্যে খুন করিয়া লাশ গুম করিয়া ফেলিবে। বিবাদীগন এলাকার প্রভাবশালী ও ধনাঢ্য প্রকৃতির লোক। তাহারা যে কোন সময় আমার মৎস্য খামার ও গবাদি পশুর যে কোন ক্ষতি সাধনসহ লুটপাট করিতে পারে। বিবাদীগণ গ্রাম্য পঞ্চায়েত, ইউ/পি গ্রাম্য আদালত ও আইনের তোয়াক্কা করেনা। বিবাদীগন যে কোন সময় আমাকে যে কোন স্থানে খুন খারাপি করিতে পারে বিধায় নিরুপায় হইয়া আইনের আশ্রয় গ্রহন করিলাম। উক্ত অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা জগন্নাথপুর থানার এ এস আই তালেব আলী জানান, বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেছে। সিরাজ আলী জানান, সম্প্রতি আব্দুল গফুর আমার যাতায়াতে বাধা নিষেধ দেয়ায় আমি পাকা পিলার ফেলে রাস্তা বন্ধ করে দেই।
Leave a Reply